ভোলায় জলকপাট নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

ছবিঃ ইনফোটুডে
ইলিয়াস সানিঃ তজুমদ্দিন প্রতিনিধি।
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নে মেঘনা নদীর তীরে জলকপাট নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে স্থানীয় পরিবেশ। অনিয়মের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিক লাঞ্ছিত হওয়ার পাশাপাশি গ্রামবাসী ও ঠিকাদারপক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই এলাকায় জলকপাটের ঢালাই কাজ শুরু হয়। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, কাজের মান অত্যন্ত নিম্নমানের। সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখতে পান, প্রকল্প এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো দায়িত্বশীল কর্মকর্তা উপস্থিত নেই। শ্রমিকরা নিম্নমানের পাথর, বালু ও সিমেন্ট ব্যবহার করে ঢালাই করছিলেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নে শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। স্থানীয় গ্রামবাসীরা সাংবাদিকদের পক্ষে অবস্থান নিলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। শুরু হয় সংঘর্ষ। এ সময় মো. শামীম, মো. সেলিম, মো. ফারুক, সালাউদ্দিন ও ইয়ামিনসহ ছয়জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে চারজনকে তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক রফিক সাদী জানান, সিমেন্ট-বালুর অনুপাত সঠিক না থাকায় তাঁরা কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এতে শ্রমিকরা তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয় এবং হামলা চালায়।
এদিকে ৭৪ কোটি ১৭ লাখ টাকার প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গোলাম রাব্বানী কনস্ট্রাকশন অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী মো. মমিন বলেন, কাজের মান ঠিকঠাক ছিল। তবে সাংবাদিকরা যখন সাইটে যান, তখন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন না। শ্রমিকরা অশিক্ষিত ও স্থানীয় হওয়ায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. তানভীর হাসানও অভিযোগ নাকচ করে দেন। তিনি জানান, সকাল থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত তিনি সাইটে ছিলেন, এরপর ইউএনও কার্যালয়ে জরুরি সভায় যোগ দেন এবং পরে অন্য একটি সাইটে যান।
এ ঘটনায় তজুমদ্দিন প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তজুমদ্দিন থানার ওসি মো. মহাব্বত খান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।