জুন ২২, ২০২৫

ভোলায় পরীক্ষা কেন্দ্র নিয়ে বিতর্ক।

0
ভোলায় পরীক্ষা কেন্দ্র নিয়ে বিতর্ক।

ছবি / সংগ্রহীত

মো.ইলিয়াস সানি। ভোলা সরকারি কলেজ এবং ভোলা ফজিলাতুন্নেছা মহিলা কলেজ—দুইটি প্রতিষ্ঠানের নাম শুনলেই বোঝা যেত, পরীক্ষা হবে মানেই হবে প্রকৃত যোগ্যতার প্রমাণের লড়াই। বিগত বছরগুলোতে এই দুই কলেজেই অনুষ্ঠিত পরীক্ষাগুলোতে শিক্ষার্থীরা কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে, নিজ নিজ মেধা দিয়ে উত্তীর্ণ হতেন। এই অভিজ্ঞতা ছিল অনেকের কাছে গর্বের বিষয়।

 

বিজ্ঞাপন ইনফটুডে ২৪
বিজ্ঞাপন

 

কিন্তু ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় একটি অস্বাভাবিক চিত্র দেখা যাচ্ছে। এ বছর বোর্ড কর্তৃক ভোলা নাজিউর রহমান কলেজকে পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণ করায়, কিছু মেধাবী শিক্ষার্থী নিজেদের নিরাপদ ও মানসম্পন্ন পরিবেশে পরীক্ষা দিতে চেয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের মাধ্যমে একটি দরখাস্ত করেন, যাতে তারা আবার ফজিলাতুন্নেছা মহিলা কলেজে পরীক্ষা দিতে পারেন।এতে বোর্ড কর্তৃপক্ষ তাদের দরখাস্ত সাড়া দিয়ে পুনরায় বিগত বছরের ন্যায় ফজিলাতুন্নেছা মহিলা কলেজে তাদের কেন্দ্র নির্ধারণ করে।বিষয়টি দৃষ্টিগোচর আলোচিত হওয়ার পর সুযোগসন্ধানী একটি শিক্ষার্থী গোষ্ঠী এর বিরুদ্ধে মানববন্ধনের আয়োজন করে।

 

এই মানববন্ধনকে ঘিরে শিক্ষার্থী মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে, যারা পূর্বে ভোলা সরকারি কলেজ বা ফজিলাতুন্নেছা কলেজে পরীক্ষা দিয়ে এসেছেন, তারা বলছেন—”যেখানে আমরা গর্ব করে বলতে পারতাম, ‘ফল যা-ই হোক, নিজ যোগ্যতায় দিয়েছি’, আজ সেখানে কেন্দ্র নিয়ে এমন কর্মকাণ্ড লজ্জাজনক এবং শিক্ষার মুল্যবোধের অবক্ষয়ের প্রতিচ্ছবি।”

 

ভোলায় পরীক্ষা কেন্দ্র নিয়ে বিতর্ক।
ছবি / সংগ্রহীত

ভোলার অনেক সচেতন অভিভাবক বিষয়টিকে একেবারেই নেতিবাচকভাবে দেখছেন। কেউ কেউ বলছেন“যদি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার আগেই সুবিধা খোঁজে, তাহলে তাদের আত্মবিশ্বাস কোথায় দাঁড়াবে?”

 

বিগত বছর যারা ফজিলাতুন্নেছা কলেজে পরীক্ষা দিয়েছেন, তারা জানান, সেই কেন্দ্রে পরীক্ষা মানেই ছিল ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতা। ছিল কড়াকড়ি, ছিল নিয়মনীতি, কিন্তু তার মাঝেও ছিল একটি সুশৃঙ্খল পরিবেশ। সেখানে সুযোগসন্ধানী কর্মকাণ্ডের স্থান ছিল না। তাই সেই কেন্দ্রকে পুনরায় ফিরে পাওয়ার দাবিকে তারা যুক্তিযুক্ত মনে করলেও, মানববন্ধনের মতো পন্থাকে অনেকে বিবেচনা করছেন “অযথা হাঙ্গামা” হিসেবে।

 

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

 

শিক্ষকরা বলছেন—“বর্তমান প্রজন্ম কোন দিকে যাচ্ছে, সেটা নিয়ে এখন সত্যিই ভাবার সময় এসেছে। শিক্ষা মানেই তো শুধু বই নয়, এর সঙ্গে জড়িত নৈতিকতা, আত্মবিশ্বাস ও যোগ্যতার চর্চা।”

 

বর্তমানে এই বিতর্ক নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভক্তি তৈরি হয়েছে। কেউ কেন্দ্র পরিবর্তনের দাবি করছে, আবার কেউ সেটিকে সুবিধাভোগীদের হাতিয়ার হিসেবে দেখছে। শিক্ষা বোর্ড, সংশ্লিষ্ট কলেজ প্রশাসন এবং স্থানীয় অভিভাবকমহলে চলছে আলোচনা, বিতর্ক, এবং উদ্বেগ।

 

এই ঘটনা ভোলার শিক্ষা ইতিহাসে হয়তো থেকে যাবে একটি প্রশ্নবিদ্ধ অধ্যায় হিসেবে।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *