মার্চ ২৩, ২০২৫

এবার ট্রাম্পের সাথে জেলেনেস্কির বাকযুদ্ধ প্রকাশে

0
এবার ট্রাম্পের সাথে জেলেনেস্কির বাকযুদ্ধ প্রকাশে

ট্রাম্পের সাথে জেলেনেস্কির বাকযুদ্ধ । ছবি/সংগ্রহীত

স্টাফ রিপোর্টার: রুহুল আমিন শিশির

 

এবার হোয়াইট হাউসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে বাগ্‌বিতন্ডা হয়েছে। এই ঘটনাটা দুঃখজনক হলেও অপ্রত্যাশিত ছিল না বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। গতকাল শুক্রবার হোয়াইট হাউসে এই বাগবিতন্ডার ঘটনা ঘটে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার হামলার পর যুদ্ধ সহায়তা হিসেবে ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের লাখো কোটি ডলারের সহায়তা পাঠানোর ঘোর বিরোধী ছিলেন ট্রাম্প। তিনি এ নিয়ে শুরু থেকেই সরব ছিলেন এবং প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় গেলে দ্রুত এই যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন। যদিও কীভাবে যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন তা নিয়ে ট্রাম্প বিস্তারিত কিছু বলেননি।

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞপ্তি

উল্লেখ থাকে যেন, গত ২০ জানুয়ারি ২০২৫ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ট্রাম্প। ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেন। এসব থেকে আন্দাজ করা যাচ্ছিল ইউক্রেনকে বাদ দিয়েই তিনি শান্তি আলোচনা শুরু করতে চলেছেন। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপে কিয়েভ ক্ষুব্ধ হয়। ইউরোপের দেশগুলো হতবাক হয়। তারপর থেকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবং ওয়াশিংটনের ইউরোপীয় মিত্ররা ট্রাম্পের প্রতি যে কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে ইউক্রেনের নিরাপত্তার নিশ্চিত করার অনুরোধ করতে থাকেন। এমনটাও বলা হয়, উভয় পক্ষের কেউ চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করলে তার পরিণতি কি হতে পারে তাও যেন চুক্তিতে নিশ্চিত করা থাকে।

 

ট্রাম্প তাদের এই অনুরোধ উপেক্ষা করে গেছেন এবং বলেছেন, তিনি এ ধরনের কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারবেন না। ট্রাম্প বরং জোর দিয়ে বলেছেন, পুতিন তাঁকে যথেষ্ট ‘সম্মান’ করেন। তাই চুক্তি লঙ্ঘন করবেন না। শুক্রবার জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের একপর্যায়ে ট্রাম্প এবং তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স অভিযোগ করেন, (রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে) যুক্তরাষ্ট্র যে সমর্থন দিয়েছে তার জন্য জেলেনস্কি যথেষ্ট ‘কৃতজ্ঞতা প্রকাশ’ করেননি।

এবার ট্রাম্পের সাথে জেলেনেস্কির বাকযুদ্ধ প্রকাশে
এবার জেলেনেস্কির বাকযুদ্ধ প্রকাশে। ছবি/সংগ্রহীত

এ দিকে বাগ্‌বিতন্ডার পর জেলেনস্কি ও তাঁর প্রতিনিধি দলকে হোয়াইট হাউস থেকে চলে যেতে বলা হয় বলে জানিয়েছেন ট্রাম্পের প্রেসসচিব। এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছেন, ‘যখন তিনি (জেলেনস্কি) শান্তির জন্য প্রস্তুত হবেন তখন তিনি ফিরে আসতে পারেন।’ শুক্রবারের বৈঠক নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (আইসিজি) জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ব্রায়ান ফিনুকেন বলেন, শুক্রবারের বৈঠকের পুরোটা সময়ই উত্তেজনাপ‚র্ণ ছিল। ফিনুকেন আরও বলেন, ‘ওভাল অফিসে প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্টের আচরণ ছিল অপ্রত্যাশিত। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা করা নিয়ে যা ভাবেন এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের বিষয়ে তিনি যে বর্ণনা প্রচার করেন তা সবারই জানা। তাই তাদের ওই আচরণ অতটাও অবাক করা ছিল না।’

 

ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বাগ্‌বিতন্ডার পর ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের শেষে জেলেনস্কি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া আক্রমণকারী রুশ বাহিনীকে আটকে রাখা ইউক্রেনের জন্য ‘কঠিন’ হয়ে যাবে।জেলেনস্কি আরও বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে কিয়েভের সম্পর্ক পুনরুদ্ধার সম্ভব। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি চাই ট্রাম্প সত্যিই আমাদের পক্ষে থাকুন। জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের শুক্রবারের ওই বৈঠকের যে পরিণতি হয়েছে তা ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ওই বৈঠকের পরপরই ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশ দ্রুত ইউক্রেনের প্রতি তাদের সমর্থন জানান।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *